শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা : জেলায় ৪৭ কেন্দ্রে ৩০৯৪৯ পরীক্ষার্থী

শাহ নিয়াজ : দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ থাকার পর সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। জেলায় এবারে অংশ নিচ্ছে মোট ৩০ হাজার ৯৪৯ জন পরীক্ষার্থী। তারমধ্যে ২৮টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী ২৩ হাজার ৩০৪ জন, ১৩টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার্থী ৬ হাজার ৫৬৫ জন এবং ৬টি কেন্দ্রে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৮১ জন।

প্রথম দিন সকালে এসএসসি’র পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দাখিলের কোরআন মজিদ ও তাজভিদ সকালে এবং বিকালে দাখিলের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা। আর কারিগরির (ভোকেশনাল) পদার্থবিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে সকালে। এ পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হবে ২৩ নভেম্বর। সকাল-বিকাল দুই শিফটে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি কভিড-১৯ এর কারণে প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আক্রান্তের হার সহনীয় মাত্রায় উন্নীত হওয়ায় পুনর্বিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রাখতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের একই সময়ে পরীক্ষা না নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়ে আনা হয়েছে।

দেড় ঘণ্টায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ তিনটি বিষয়ের উপর পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয় গুলোর ফলাফলের উপর মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলায় এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৩০ হাজার ৯৪৯ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৪৭টি কেন্দ্রে এবারের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারমধ্যে ২৮টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী ২৩ হাজার ৩০৪ জন, ১৩টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার্থী ৬ হাজার ৫৬৫ জন এবং ৬টি কেন্দ্রে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৮১ জন।

কেন্দ্রওয়ারী এসএসসি পরীক্ষার্থী ঃ কক্সবাজার সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৮৩ জন, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮৪৬ জন, কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯১৪ জন, ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬২৫ জন, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলে ৯৯৯ জন, খুরুশকুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৫৫ জন, রামু খিজারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৬০ জন, রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৪০ জন, চকরিয়া সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৭০৪ জন, চকরিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪০৩ জন, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে ২ হাজার ৩৫৬ জন, বদরখালী কলেজে ৬১৭ জন, কুতুবদিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৫৫ জন, ধুরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫১৬ জন, কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৪৯ জন, মহেশখালী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৮৫ জন, কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭১১ জন, মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫১৫ জন, বড় মহেশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৫৯ জন, ইউসুছখালী নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০৪ জন, উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪২ জন, উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ২০০ জন, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৯৩ জন, টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৭৬ জন, আলী আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৯০ জন, এজাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০২ জন, পেকুয়া জি,এম,সি ইনস্টিউশনে ৬৭৬ জন ও পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ২২৯ জন।
কেন্দ্রওয়ারী দাখিল পরীক্ষার্থী ঃ ইসলামিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় ৪৪০ জন, ঈদগাঁও আলমাছিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৫৬৩ জন, আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসায় ৬৫৫ জন, মেরংলোয়া রহমানিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৩২৪ জন, রামু ফয়জুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় ১৬৭ জন, চকরিয়া আনওয়ারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় ৬১৩ জন, চকরিয়া আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় ৫৮৪ জন, কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৪৬২ জন, পুটিবিলা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৪৩১ জন, কালামারছড়ায় ৫৭৭ জন, রাজাপালং এম, ইউ ফাজিল মাদ্রসায় ৪৬০ জন, রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় ৬১৬ জন এবং আনোয়ারুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় ৬৭২ জন।
কেন্দ্রওয়ারী এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার্থী ঃ কক্সবাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে (ভেন্যু-আমেনা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) ৩০৮ জন, রামু টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে ১৯৫ জন, রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৮৮ জন, খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে ১২৫ জন, নুরুল ইসলাম চৌধুরী বিএম স্কুল এন্ড কলেজে ২০৩ জন এবং মহেশখালী আইল্যান্ড হাই স্কুলে ৬২ জন।

পরীক্ষার বিশেষ নির্দেশনায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কক্ষে গিয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পরীক্ষা শেষে ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। ২০২১ সালের সংশোধিত ও পুর্নবিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক ৩টি র্নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সাথে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ঃ অনিবার্য কারণে কোনও পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্র সচিব সংশ্রিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করবেন। কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষা চলাকালে এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ সম্পূণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণবশত কোনও পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য পরীক্ষার্থীর সঙ্গে একজনের বেশি অভিভাবক আসতে পারবেন না। তাছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর জারি করা গাইড লাইনের নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা একাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি জোরদার করবে।

এসএসসির সময়সূচি : পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ১৪ নভেম্বর সকালে পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), ১৫ নভেম্বর সকালে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং বিকেলে হিসাব বিজ্ঞান, ১৬ নভেম্বর রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর সকালে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বিকেলে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং ২২ নভেম্বর উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) জীব বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), ২৩ নভেম্বর সকালে পৌরনীতি ও নাগরিকতা এবং অর্থনীতি, বিকেলে ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ের পরীক্ষা হবে। এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে, স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক খাতার নম্বর দিয়ে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888